খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে: রিজভী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণতন্ত্রের সৈনিক বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে, আর দাপটে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। আজকে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন যে আটকে রাখা হয়েছে, এটা একমাত্র সরকারপ্রধানের কথামতোই হচ্ছে। আর কারো কোনো হাত নেই এখানে। তিনি চান দেশনেত্রীকে যত দিন পারা যায়, কষ্ট দেবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত যা করছে, শেখ হাসিনার কথামতো ও নির্দেশেই করছে। রিজভী বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে আর খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।
সন্ত্রাসী ও গডফাদারদের শুধু ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না, তাদের গোপনে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, গতকাল (গত বুধবার) ইফতারের পরপরই চট্টগ্রামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরীর গুডস হিল পৈতৃক নিবাসে একদল সশস্ত্র ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী আক্রমণ চালায়। সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপকভাবে গাড়ি ভেঙে চুরমার করা ছাড়াও বাড়ির দরজা-জানালা ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এই হামলাটি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সাদেক মো. সায়েমের নেতৃত্বে চালানো হয়। এতে অংশ নেয় চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ, হাজী মো. মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। এই হামলায় ২০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও নিরাপত্তা প্রহরীদের বাসাসহ মূল ভবনেও ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও তারা সেখানে দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
এ সময় বাসার চারিদিকের সিসি ক্যামেরাও ভেঙে ফেলে সন্ত্রাসীরা। রিজভী আরো অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতি আবু সাদাত মো. সায়েম ঔদ্ধত্যের সঙ্গে বলে, ২০১০ সালে এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ওপর চট্টগ্রাম আদালতে আমরা হামলা চালিয়েছি। যারাই আওয়ামী লীগ ও আমাদের নেত্রীকে স্পর্ধা দেখাবে, তাদেরকে সাইজ করা হবে। এই হচ্ছে আওয়ামী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যাডার বাহিনী। অপরাধীকে প্রশ্রয় দিয়ে সরকার সারা দেশে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে বেআইনি পন্থায়। আওয়ামী চেতনায় রাঙানো পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় অপরাধীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জীবন, সহায়-সম্পদ সবকিছু বিপন্ন করার। তাই ক্ষমতার শীর্ষ ব্যক্তিদের আসকারা পেয়ে সায়েমরা এলাকায় এলাকায় মাফিয়া ডন এ পরিণত হয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খাদেমুল ইসলাম খাদেমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হাজারীবাগ থানা বিএনপির সদস্য সচিব মো. আবদুল আজিজের বাসভবনে গিয়ে তার বড় ভাই এবং বাসার সদস্যদের বলে এসেছে যে, তিন দিনের মধ্যে আবদুল আজিজ থানায় সাক্ষাৎ করতে না এলে তাকে মেরে ফেলা হবে এবং বুলডোজার দিয়ে তার বাড়ি ভেঙে ফেলা হবে। পাশাপাশি আবদুল আজিজ যেন অবিলম্বে আওয়ামী লীগে যোগদান করে, সেটির জন্যও হুমকি দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম।